সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩২ অপরাহ্ন
কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধিঃসাইফুল হাসান
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের পদ্মবিলা গ্রাম থেকে দেবগ্রাম কাঁচা রাস্তার শেষ অংশে খালের উপর ডাবলবেন্টের একটি কার্লভার্ট নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে তিন বছর আগে। এখনো কালভার্টের মূল কাজ শুর হয়নি। শুধু মাঠি খুঁড়ে গভীর কুয়া করে রাখা হয়েছে,পাশেই উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের বাথামডাঙ্গা বাজার হতে সাজাইল ইউনিয়নের সাজাইল বাজারে ৫০ গ্রামের বাসিন্দার যাতায়াতের মূল পাকা রাস্তা কিন্তু কার্লভার্ট নির্মানে করতে গিয়ে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের অবহেলায় ঐ স্থানের রাস্তা ভেঙ্গে খালের সাথে মিশে গেছে।এই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়তই যান- বাহন ও শিক্ষার্থী সহ কয়েকটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করে।কিন্তু রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে প্রায়ই দুর্ঘটনা ও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে,
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৫ মিটার দৈর্ঘ্য ৬ মিটার উচ্চতার ডাবল বেন্টের কার্লভার্ট নির্মাণে ৭৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে কার্লভার্ট নির্মাণের কাজ পায় আইডি নম্বর ৫৭৩১৪৬ মেসার্স খন্দকার শাহিন আহমেদ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
চুক্তি অনুযায়ী সেতুটির কাজ শুরু হয় ২৫ জুলাই ২০২১ এবং শেষ করার কথা ২৫ জুন ২০২২সালে। কিন্তু গত তিন বছর ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রেখেছে।
গত বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মূল কার্লভার্টের কাজ শুরু হয়নি। নির্মাণস্থল থেকে ঠিকাদার শুধু মাটি খুঁড়ে গভীর কুয়া করে রেখেছে।
খালের দুইপাশ আটকিয়ে রেখেছে মাটিকেটে ফলে কৃষকরাও বিপাকে পড়ে রয়েছে।মাটি খুড়ে ঔস্থান এমন করেছে পাশের মূল পাকারাস্থাটি ধঁসে গিয়ে খালে পরিনত হয়েছে।
পরবর্তী কাজের জন্য ঠিকাদারের কোনো মালপত্র সেখানে নেই। নেই কাজের কোনো সাইনবোর্ডও। পূর্ব পাশ দিয়ে কোনরকম সড়কের একটু জায়গা আছে চলাচলের জন্য, সেটিও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।পাশের দুটি বাড়ি ধঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নির্মাণস্থলে কোনো শ্রমিকেরও দেখা পাওয়া যায়নি।
এ সময় স্থানীয় ইউপি (সাবেক) সদস্য মোঃ জাহাংগীর হোসেন কালু(৫৮)জানান, গত ৪ বছর ধরে কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় মানুষ খুব দুর্ভোগে আছে। তারা প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। অটোরিকশা-ভ্যানে চলাচলের সময় গভীর করে রাখা এই খালে অনেকে পড়েছে।বৃষ্টির সময় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। এখানে আগে ছোট কার্লভার্ট ছিল কোন সমস্যা ছিল না।কি কারনে এতো বড়ো কার্লভার্ট করতে হাজার হাজার পথচারীর ভোগান্তি? বরং এইটা করতে এসে সরকারি এতো টাকা ব্যায়ের রাস্থার ক্ষতি করা হলো? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ দ্রুত এই রাস্তা সংস্কারের কাজ করে প্রায় ৫০ গ্রামের বাসিন্দাদের ভোগান্তি এবং দুর্ঘটনা থেকে মুক্ত করা হোক।
দেবগ্রামের বাসিন্দা মুসাব্বির হোসেন(২৮)বলেন- ৪ বছর ধরে ব্রীজটির কাজ এভাবে পড়ে আছে। মানুষ খুব ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের বারবার বলার পরও কোনো লাভ হচ্ছে না। তিন বছরের অধিক সময় ধরে ব্রীজ না করে হাজার হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ঠিকাদার এখানে কাজ না করে শুধু মাটি কেটে গভীর করে রেখেছে। তার তো কোন সমস্যা নেই। ভোগান্তিতে আমরা পড়ে আছি। দুদিন আগেও এসএসসি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে গিয়ে এখানে পড়ে দুর্ঘটনা শিকার হয়, মাটি কেটে খাল ভরাটের কারনে কৃষকেরা বিপাকে পড়ে আছে। কার্লভার্ট করতে গিয়ে মূল রাস্তাই ভেঙ্গে ফেলেছে। আমরা এই
ভোগান্তি লাঘবের জোর দাবি জানাই।
ঝুঁকিতে পড়ে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা সুমন শেখ (৩৫) জানান, আমার বসতবাড়ীর সাথে হওয়ায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটতে আমরা দেখেছি,। এ পর্যন্ত প্রায় দুইশত দুর্ঘটনা এখানে ঘটেছে,দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেক কাঁচামালের পিকআপ এখানে পড়ে দূর্ঘটনা ঘটেছে। অনেক পথচারী অনেকবার এই গভীর জায়গায় পড়েছে, বর্ষার সময় বোঝার উপায় নেই এখানে পানি নাকি পিজের রাস্থা?ঠিকাদার মাটি কেটে নেওয়ার কারনে এত গভীর ও বড় জায়গা করে রেখেছে।আমর বসতিঘর নিয়ে বিপদে আছি।বৃষ্টি শুর হলে ঘরসহ ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সজল কুমার দত্ত জানান, ৫/৬ মিটার ডাবলবেন্টের কার্লভার্ট ২০২১সালে শুরু হয় ২০২২ সালের জুনমাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
এ কাজের কোন বিল দেওয়া হয়নি তবে এলাকার বাসিন্দারা ভোগান্তিতে রয়েছে আমরা ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি না পেলে কাজ বাতিল করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো।